দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়ঃ

ভূমিকাঃ

ডায়াবেটিস আস্তে আস্তে পুরো বিশ্ব কে গ্রাস করে নিচ্ছে। প্রতিনিয়ত যেনো বেড়েই চলেছে ডায়াবেটিস রোগীর হার। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় জানতে পেরেছেন যে। ডায়াবেটিস আস্তে আস্তে পৃথিবীতে এমন রূপ ধারণ করবে যা কোনো মহামারির থেকে কম নয়। এটি প্রতিটি মানুষের মধ্যে আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পরবে। এখন এমনো দেখা দেয়া শুরু হয়েছে যে পেট থেকে কেবল হওয়া শিশুও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

এটি যে আস্তে আস্তে মহামারিতে রূপ নিচ্ছে তা আমরা সকলেই নিজ চোখেই দেখতে পাওয়ার সত্ত্বেও। অবহেলা করেই চলেছি। প্রতি বছর প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যাচ্ছে এটির কারণে। আমাদের এটিকে এভাবে অবহেলা করাটা একদম ঠিক হচ্ছে না। আমাদের দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় বের করা উচিৎ।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়ঃ

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় তেমন একটা কঠিন কোনো কাজ না। এটি কে অনেক সহজেই দ্রুত নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস এর পরিবর্তন আনতে হবে এবং প্রতিদিন নিয়ম করে একটু ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম এর সময় টা যদি সকালে হয় তাহলে আরও ভালো হয়। কারণ সকালে মন ফ্রেশ থাকে এবং পেট টাও তেমন একটা ভরা থাকে না। তাই সকালে ব্যায়াম করাটাও একটু সহজ লভ্য হয়ে ওঠে।

আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাত্রার মানে অনেকটা পরিবর্তন আনতে হয় ডায়াবেটিসের কারণে। এটি আমাদের জীবনের অনেক পছন্দের খাবার গুলোও কেড়ে নেয় আমাদের কাছে থেকে। এই ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা আমাদের শরীরে অন্যান্য রোগের সাথে সন্ধি করে থাকে। এবং সেটিকে ভয়াবহ রূপ নিতে সাহায্য করে। তাই আমাদের দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলো জেনে রাখতে হয়।

দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়ের মধ্যে রয়েছে কিছু খাবারের জন্য নিষেধাজ্ঞা আর কিছু খাবার খেতে বলা হয়েছে। যেমনঃ আমাদের মিষ্টি জাতীয় খাবার, ভুট্টা, আলু, ভাত, ইত্যাদি। এই খাবার গুলো থেকে নিজেকে যতটা সম্ভব একটু দূরে রাখার চেষ্টা করবেন। আর প্রতি নিয়ত সকালে খালি পেটে লেবুর শরবত খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এটি অনেক কার্যকরী একটি উপায়।

ডায়াবেটিস কেনো হয়ঃ

ডায়াবেটিসের তেমন মূল কোনো কারণ নেই বললেই চলে। ডায়াবেটিস অনেক কিছুর কারণেই হয়ে থাকতে পারে। ডায়াবেটিস অলসতার কারণে, খাওয়াদাওয়ার অনিয়মের কারণে, অতিরিক্ত চিন্তায় মগ্ন থাকার কারণে ইত্যাদি। ডায়কবেটিস হয়তো তেমন ভয়ানক কোনো ব্যাধি না। কিন্তু ভয়ানক ব্যাধিকে বাসা বাধতে সহায়তা করে। বুঝলেন না তো, আচ্ছা চলুন বুঝিয়ে বলছি। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যাকে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রনের মধ্যে আনা যায়।

কিন্তু এটি যার মধ্যে থাকে তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক আংশে কমে যায়। যার কারণে তাদের শরীরে যেকোনো ধরণের রোগ ব্যাধি সহজেই অনেক বড় আকার ধারণ করতে পারে। এবং ডায়াবেটিসের কারণেও যদিও তার তেমন বড় কোনো সমস্যা হবে না।

কিন্তু এটি অন্য ব্যাধি গুলোকে মরণশীল রোগে পরিনত করার ক্ষমতা রাখে। তাই আমাদের ডায়াবেটিস হয় এমন কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। এবং নিজের শরীর কে সবসময় কর্মের মধ্যে স্থাপন করে রাখার চেষ্টা করতে হবে। আর নিজের মধ্যে থেকে অলসতা দূর করতে হবে।

মাত্র ৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন সহজেই

মাত্র ৭২ ঘন্টায়ই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখন আপনারা অনেকেই ভাবছেন এ আবার কে এলো। এতোদিন ধরে ঔষধ খেয়ে খেয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আনতে পারলাম না সে কিনা বলে মাত্র ৭২ ঘন্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু হ্যাঁ বন্ধুরা আমি একদম সত্যি কথাই বলছি। এটি আমার আপনার মতো সাধারণ মানুষ বলেন নি।

এই কথাটি হয়েছিলো ২০২৩ সালের ২১শে জুলাই শুক্রবার একটি হেলথ কেয়ার থেকে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। হেলথ কেয়রটির নাম হচ্ছে হলিস্টিক হেলথ কেয়ার। এর চেয়ারম্যান হচ্ছে ডঃ গোবিন্দ চন্দ্র দাস। এই আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন আন্তর্জাতিক পুষ্টিবিদ ডাঃ বিশ্ব রূপ রায় চৌধুরী। তাদের এ পরিক্ষা তারা অনেক জায়গাতেই করেছিলেন।

অর্থাৎ, ৭২ ঘন্টাতেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে আনার কিছু নিয়ম কানুন আছে। সেই নিয়ম কানুন গুলো দিয়ে তারা কিছু ডায়াবেটিস রোগীদের পরিক্ষা করেন এবং তারা এটার সুফল পান। এই কথাটি বলেন ডাঃ গোবিন্দ চন্দ্র দাস। তিনি বলেন কিছু নিয়ন কানুনের মাধ্যমেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, যে কোনো রকমের ঔষধ ছাড়াই।

ডাঃ গোবিন্দ চন্দ্র দাস বলেন নিয়ম মতো খাওয়াদাওয়া ঠিক ঠাক করলেই এটি নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব। অর্থাৎ, যে খাবার গুলো ডায়াবেটিস রোগীদের খাওয়া নিষেধ সেগুলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। এবং, যেমন ভাত, গরুর মাংস, তেল-চর্বি ইত্যাদি খাবার যদিও আমাদের সকলের অনেক পছন্দের খাবার তবুও এগুলো থেকে নিজেকে একটু দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

এবং প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াতে হবে। আর নিজেকে সব সময় কাজে নিয়জিত করে রাখতে হবে। আর নিজেকে যতটুকু সম্ভব চিন্তা মুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। আপনারা সবাই এগুলো একটু মেনে চলুন ইনশাআল্লাহ মাত্র ৭২ ঘন্টায় অর্থাৎ, তিন দিনে এটাকে নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব।

খালি পেটে ডায়াবেটিস কমানোর উপায়ঃ


পুরো পৃথিবীতে ডায়াবেটিস এর পরিমাণ প্রায় ৪০০ মিলিয়নের ও বেশি। ডায়াবেটিস কে আমরা এতখন অনেক সহজতর একটি রোগ বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু এটি অতটাও সহজতর রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগ গুলোর সাথে অনেক সহজে বন্ধুত্ব কিরে নিতে পারে। ডায়াবেটিস অন্যান্য সব রোগ কে বড় আকার ধারনে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস যতটা সহজ তর রোগ এটি নিয়ন্ত্রনে না রাখলে তার থেকেও অনেক গুণে ভয়ানক রূপ ধারণ করতে পারে।

ডায়াবেটিস কমানোর জন্য খালিপেটে কিছু জিনিস খাওয়া অনেক কার্যকরী। খালিপেটে লেবুর শরবত অনেকটা কার্যকরী। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস কমানোর জন্য বিজ্ঞ্যানীরা গবেষণা করে প্রায় ৪০০ এর ও বেশি গাছ পেয়েছে। যা ডায়াবেটিস এর জন্য অনেক উপকারী। ভৃঙ্গরাজ পাতা এর মধ্যে একটি।

এটির রস যদি খালি পেটে খাওয়া হয় তাহলে সারাদিন রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে এবং শরীরে ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়তা করে মেথিও অনেক উপকারী ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যে এটিও হতে পারে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়। সকালে খালি পেটে এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস কমানোর জন্য খালি পেটে এমন আরও অনেক খাবার রয়েছে।

কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে জেনে নিন এক পলকেঃ

ডায়াবেটিস হলে খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রনে আনার কথা বলা হয়েছে ঠিকই কিন্তু কি কি খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে তা তো জানা হয় নি। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় গুলো জানতে হলে অবশ্যই এগুলো ভালো ভাবে জানতে হবে। তাহলে চলুন এবার একটু জেনে নেই যে কোন কোন খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে>>

১. শারীরিক সচেতনতার কথা বলতে গেলে সব সময়ই আমাদের সামনে একটি খাবার প্রথমেই চলে আসে যেটি হচ্ছে তৈলাক্ত খাবার। অর্থাৎ, ফাস্ট ফুড যেগুলোকে বলা হয় সেগুলো। আর তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা মানে বুঝতেই পারছেন বাইরের খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ বাইরের খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে যা আমাদের ফ্যাট বাড়ায়।

আর ডায়াবেটিস হয়ে থাকে মূলতো ইনসুলিন নামক একটি হরমনের কারণে। এই হরমন টি যখন তার কাজ ঠিকঠাক করতে পারে না তখন শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকে। আর তখনি জন্ম নেয় আমাদের শরীরে এই ডায়াবেটিস নামর রোগটি। এখন আমরা সবাই একটি সাধারন জ্ঞ্যান থেকে ভেবে দেখি একটু যে, যদি আমরা মোটা হয়ে যায় তাহলে আমাদের শরীরে অবশই হরমোনের চলাচলে বাধা আসবে।

স্বাভাবিক ভাবে এটি চলাফেরা করতে পারবে না। আর তখনি শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়তে থাকবে। এবং ডায়াবেটিস ও আস্তে আস্তে খারাপ রূপ ধারণ করবে। তাই এই খাবার টি থেকে নিজেকে দুরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

২. এবার আপনাদের যেটি বলতে চলেছি সেটি শুনে দয়া করে কেউ বকা দিয়েন না। আসলে এবার আমি কিছু ফলের কথা বলতে চলেছি। কারণ, আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু ফল খেয়ে থাকি যা ডায়াবেটিস রোগিদের জন্য একটু ক্ষতিকর বললেই চলে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা কিছু কিছু ফল একটু বেশিই পছন্দ করে থাকি। যেমনঃ আম, কাঠাল, কলা, লিচু, তরমুজ ইত্যাদি।

এই ফল গুলোতে সুগারের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। তাই এগুলো যদিও আমাদের অনেকেরই পছন্দের ফল। কিন্তু তার পরেও নিজেকে কষ্ট করে হলেও একটু এই ফল গুলো থেকে বিরত রাখুন। কিন্তু হ্যাঁ, এখানে একটি ফল রয়েছে যা আপনারা কাচা অবস্থায় নির্দ্বিধায় খেতে পারেন। সেটি হচ্ছে আম।

৩. আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা প্রতি নিয়ত একটি খাবার খেয়ে থাকি তরকারির সাথে। সেটি হচ্ছে আলু। আলুতে রয়েছে অনেক পরিমাণে ক্যালরি। যা শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। তাই আমাদের আলু থেকেও একটু দূরে থাকতে হবে।

৪. কিছু কিছু ঔষধ ও রয়েছে যা আমাদের শরীরে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যেমন ধরেন যেকোনো ব্যাথার ঔষধ যা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। এবং অতিরিক্ত প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

৫. ভরাপেট ভাত খাবেন না কখনো এটি শরীরে ইনসুলিন তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটায়। এবং এ কারনেও অনেক সময় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে পারে।

বি.দ্রঃ এই পোস্টটি শুধু স্বাভাবিক জীবনে সুস্থ থাকার জন্য লিখা হয়েছে। যেকোনো বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url